শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক কূটনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী


প্রকৌশল নিউজ:
শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক কূটনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
  • Font increase
  • Font Decrease

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, স্বাধীনতার পূর্বে ও পরে বঙ্গবন্ধু কূটনৈতিক ধীশক্তি ও দূরদর্শীতার যোগ্য উত্তাধিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক  কূটনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

রোববার ফরেন সার্ভিস ডে উপলক্ষ্যে এক ভিডিও বার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশের বৈদেশিক মিশনে কর্মরত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে তিনি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। এবছর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের অংশ হিসেবে ফরেন সার্ভিস ডে পালিত হচ্ছে।

এসময় ড. মোমেন বলেন. শান্তিপূর্ণভাবে বিবাদ মীমাংসা, আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশসমূহের নেতৃত্ব প্রদান, মিয়নমারের বাস্তুচ্যুত লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মানবিক কারণে আশ্রয় প্রদান-এ বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তা ও দূরদর্শীতার পরিচয় বহন করে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে পৃথিবীর অনেক প্রখ্যাত নেতা এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও বাংলাদেশের অনন্ত সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সকল কর্মকর্তাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলদেশের অবস্থান ও সংশ্লিষ্টতার কারণে ১৯৭১ সালের মত দক্ষিণ এশিয়া আবারও সারা বিশ্বে কূটনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

ড. মোমেন উল্লেখ করেন, এম হোসেন আলীর নেতৃত্বে কলকাতায় তৎকালীন পাকিস্তান মিশনের ৬৫ জন বাঙালি কর্মকর্তা ও কর্মচারী ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে বিদেশের মাটিতে প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। এর আগে সে বছর ৬ এপ্রিল তৎকালীন পাকিস্তানের দিল্লী দূতাবাস থেকে দুজন কর্মকর্তা কে এম শিহাবুদ্দীন ও আমজাদুল হক বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে পদত্যাগ করেন।  তাঁদের সাহস ও দেশপ্রেম অনুসরণ করে দক্ষিণ আমেরিকা ও ইউরোপসহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত বাঙালি কূটনীতিকরা পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে সরব হন। বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস এসব সাহসী সন্তানদের অনুপ্রেরণার গর্বিত উত্তরাধিকার। ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়’ বঙ্গবন্ধুর এ মূলমন্ত্রকে বাংলাদেশ অনুসরণ করে চলেছে এবং তা গত ৫০ বছর এদেশের কূটনীতিতে সময়োচিত হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি, উন্নয়ন ও মানবিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবদান ফরেন সার্ভিসের নিবেদিতপ্রাণ কর্মকর্তাদের কঠোর পরিশ্রমের সুফল, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশকে গর্বিত করে। গত ৫০ বছর বৈদেশিক মিশনে কাজ করার মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করার জন্য সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর ‘আমরাও পারি’ মানসিকতা ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে ফরেন সার্ভিসের নবীন কর্মকর্তারা সারা পৃথিবীতে কাজ করবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি। করোনা মহামারির মধ্যেও সাহসিকতার সাথে কাজ করার জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিনি ধন্যবাদ জনান।

তিনি মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকার, রাষ্ট্রপ্রধান ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান ১৪৭টি শুভেচ্ছা বার্তা ও ৩০টি ভিডিও বার্তা প্রদান করায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনন্দ প্রকাশ করেন এবং এক্ষেত্রে ভূমিকা প্রদানকারী কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান।

এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিগঠনে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলদেশকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ প্রবাসী বাংলদেশির অবদান সশ্রদ্ধাচিত্তে স্মরণ করেন। বাংলাদেশের সম্ভাবনার প্রতি আস্থাশীল এবং সবসময় পাশে দাঁড়ানোর জন্য সকল বন্ধুরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান ড. মোমেন।